Header Ads Widget

Ticker

6/recent/ticker-posts

সূরা মুহাম্মদ (محمّد), আয়াত: ৩৬ religions of the world

 সূরা মুহাম্মদ (محمّد), আয়াত: ৩৬ religions of the world

religions of the world
religions of the world

সূরা মুহাম্মদ (محمّد), আয়াত: ৩৬


اِنَّمَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَا لَعِبٌ وَّ لَہۡوٌ ؕ وَ اِنۡ تُؤۡمِنُوۡا وَ تَتَّقُوۡا یُؤۡتِکُمۡ اُجُوۡرَکُمۡ وَ لَا یَسۡـَٔلۡکُمۡ اَمۡوَالَکُمۡ ﴿۳۶﴾


ইন্নামাল হায়া-তুদ্দুনইয়া-লা‘ইবুওঁ ওয়া লাহ উওঁ ওয়া ইন তু’মিনূওয়া তাত্তাকূইউ’তিকুম উজূরাকুম ওয়ালা-ইয়াছআলকুম আম ওয়া-লাকুম।


পার্থিব জীবনতো শুধু ক্রীড়া-কৌতুক। যদি তোমরা ঈমান আন ও তাকওয়া অবলম্বন কর তাহলে আল্লাহ তোমাদের পুরস্কার দিবেন এবং তিনি তোমাদের ধন সম্পদ চাননা।


The life of this world is but play and pastime, but if you believe (in the Oneness of Allah Islamic Monotheism), and fear Allah, and avoid evil, He will grant you your wages, and will not ask you your wealth.


اِنَّمَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَا لَعِبٌ وَّ لَہۡوٌ ؕ وَ اِنۡ تُؤۡمِنُوۡا وَ تَتَّقُوۡا یُؤۡتِکُمۡ اُجُوۡرَکُمۡ وَ لَا یَسۡـَٔلۡکُمۡ اَمۡوَالَکُمۡ ﴿

۳۶﴾


৩৬-৩৮ নম্বর আয়াতের তাফসীর : মহান স্রষ্টা আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়ার প্রকৃত অবস্থা বর্ণনা করে মানুষকে তার প্রতি নিরুৎসাহিত করে বলেন : দুনিয়ার জীবন তো একটি ধোঁকা ও প্রতারণা মাত্র। এ জীবনের কোন ভিত্তি নেই। মানুষ সম্পদ, সন্তান, দুনিয়ার চাকচিক্য, নারী, ভোজন বিলাসিতা, চোখ জোড়ানো অট্টালিকা ইত্যাদি নিয়ে মত্ত ও তার ভালবাসায় নিমগ্ন। 

আর এমন কাজ-কর্মে লিপ্ত হওয়া কোন উপকারে আসে না বরং আল্লাহ তা‘আলা থেকে গাফেল করে রাখে। এমনিভাবে তার জীবনের আয়ূ শেষ হয়ে যায়, মৃত্যু চলে আসে কিন্তু তাকে দুনিয়াতে প্রেরণ করার লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের কিছুই করেনি। 

ফলে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে শামিল। যেমন আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন : ‏ “তোমরা জেনে রেখ, দুনিয়ার জীবন তো খেল-তামাশা, জাঁকজমক, পারস্পরিক অহঙ্কার প্রকাশ, ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততির প্রাচুর্য লাভের প্রতিযোগিতা ব্যতীত আর কিছুই নয়; এর উপমা বৃষ্টি, যার দ্বারা উৎপন্ন শস্য-সম্ভার কৃষকদেরকে চমৎকৃত করে, অতঃপর ওটা শুকিয়ে যায়, ফলে তুমি ওটা হলুদ বর্ণ দেখতে পাও, অবশেষে তা খড় কুটোয় পরিণত হয়। 

আখিরাতে রয়েছে কঠিন শাস্তি এবং আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টি। দুনিয়ার জীবন ছলনাময় ধোঁকা ব্যতীত কিছুই নয়।

” (সূরা হাদীদ ৫৭ : ২০) (وَإِنْ تُؤْمِنُوا وَتَتَّقُوا) ‘যদি তোমরা ঈমান আন এবং তাকওয়ার জীবন যাপন কর’ তাহলে আল্লাহ তা‘আলা আমলের প্রতিদান দেবেন। ঈমান ও তাকওয়ার ফযীলত সম্পর্কে অন্যত্র আল্লাহ তা‘আলা বলেন : (یٰٓاَیُّھَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللہَ وَاٰمِنُوْا بِرَسُوْلِھ۪ یُؤْتِکُمْ کِفْلَیْنِ مِنْ رَّحْمَتِھ۪ وَیَجْعَلْ لَّکُمْ نُوْرًا تَمْشُوْنَ بِھ۪ وَیَغْفِرْ لَکُمْﺚ وَاللہُ غَفُوْرٌ رَّحِیْمٌ)‏ “হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আন, তিনি তাঁর অনুগ্রহে তোমাদেরকে দ্বিগুণ পুরস্কার দেবেন এবং তিনি তোমাদেরকে দেবেন আলো, যার সাহায্যে তোমরা চলবে এবং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।” 

(সূরা হাদীদ ৫৭ : ২৮) (وَلَا يَسْأَلْكُمْ أَمْوَالَكُمْ) ‘আর তিনি তোমাদের কাছ থেকে তোমাদের ধন-সম্পদ চাইবেন না’ অর্থাৎ তিনি তোমাদের ধন-সম্পদের মুখাপেক্ষী নন। 

আর এ জন্যই তিনি তোমাদের নিকট সমস্ত সম্পদ চাননি। বরং তা থেকে অতি সামান্যতম অংশ চান। আবার তাও এক বছর পূর্ণ হবার পর প্রয়োজনের অতিরিক্ত হলে। তার প্রতিদানও তোমাদেরকে দেবেন। যদি তোমাদের প্রয়োজনের অধিক অবশিষ্ট সমস্ত সম্পদ চাইতেন তাহলে তোমরা কার্পণ্য করতে এবং ইসলামের বিরুদ্ধে নিজেদের বিদ্বেষ ও শত্র“তা প্রকাশ করতে। 

(تُدْعَوْنَ لِتُنْفِقُوْا فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ) ‘তোমাদেরকে বলা হচ্ছে যে, আল্লাহর পথে মাল খরচ কর’ অর্থাৎ যখন যাকাত হিসেবে আল্লাহ তা‘আলার পথে ব্যয় করতে বলা হয় তখন একশ্রেণির লোকেরা কার্পণ্য করে। যারা কার্পণ্য করে তারা মূলত নিজেদেরকে পূণ্য থেকে বঞ্চিত করল। 

আল্লাহ তা‘আলা ব্যয়ের প্রতি উৎসাহ প্রদান করার অর্থ এই নয় যে, তিনি তোমাদের সম্পদের মুখাপেক্ষী। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন কারণ- ১. তোমাদের আত্মা ও সম্পদকে পবিত্র করার জন্য। ২. অভাবীদের প্রয়োজন পূরণ করার জন্য। ৩. তোমরা যাতে শত্র“দের ওপর বিজয়ী ও উন্নত থাক। 

(وَإِنْ تَتَوَلَّوْا يَسْتَبْدِلْ قَوْمًا) ‘যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে রাখ তাহলে আল্লাহ তোমাদের বদলে অন্য কাওমকে নিয়ে আসবেন’ আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন। সাহাবীরা বলল : হে আল্লাহ তা‘আলার রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমরা ঈমান থেকে বিমুখ হলে যে অন্য জাতিকে নিয়ে আসা হবে তারা কারা যারা আমাদের মত হবে না? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালমান ফারসীর কাঁধে হাত মেরে বললেন : তারা হল এ (সালমান) ও তাঁর সম্প্রদায় যদি দীন সুরাইয়া নামক তারকাতেও থাকে তাহলে ফারসীর ঐসব লোকেরা তা নিয়ে আসবে। অন্য বর্ণনাতে রয়েছে ঐ সকল লোকেরা নিয়ে আসবে। (তিরমিযী হা. ৩২৬১, সহীহ) আয়াত হতে 

শিক্ষণীয় বিষয় : ১. দুনিয়ার জীবন হল অস্থায়ী, তাই তার পিছনে মত্ত হয়ে আখিরাতকে ভুলে যাওয়া যাবে না। ২. সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কার্পণ্য করা হারাম। ৩. যাকাত না দেয়ার পরিণাম নিজের ওপরেই বর্তাবে। ৪. সালমান ফারসী (রাঃ)-এর ফযীলত জানতে পারলাম। ৫. আল্লাহর প্রতি ঈমান ও তাকওয়া অবলম্বন করলে আল্লাহ উপযুক্ত প্রতিদান দেবেন।

Post a Comment

0 Comments